লন্ডন, ২৩ জানুয়ারি : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সরকার শত্রুপক্ষের আক্রমন থেকে নিজেদের রক্ষা ও সুরক্ষিত রাখতে উপমহাদেশে বেশ কয়েকটি বিমানবন্দর তৈরী করে। এর মধ্যে সবদিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় সিলেট বিভাগে তিনটি বিমানবন্দর তৈরী করা হয়। ঠিক এর পাশেই বর্তমান ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাশহরে আরেকটি বিমান বন্দর তৈরী করা হয় যা ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উনকুটি জেলায় অবস্থিত।
পাশাপাশি এই চারটি বিমানবন্দর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশদের বেশ উপকারে আসে। সিলেট বিভাগের বিমানবন্দর গুলো হলো সাকুটিকর এয়ারপোর্ট যা বর্তমানে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে পরিচিত, মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত সমশেরনগর বিমানবন্দর, যা সমসের নগর বিমানবন্দর হিসেবে পরিচিত। এই বিমানবন্দরটি ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত চালু ছিল, ঢাকা থেকে ডমেস্ট্রিক ফ্লাইট নিয়মিত চালুছিল প্রথমে ঢাকা থেকে ছেড়ে সমসেরনগর এর পর সিলেটে সালুটিকর এয়ারপোর্ট যেত। পাকিস্তান আমলের শেষদিকে পিটিআইএ'র একটি ফ্লাইট সমশের নগর থেকে উড্ডয়নকালে ভূপাতিত হলে বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেয় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার।
আশার কথা হলো বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সমশেরনগর এয়ারপোর্টটি আবার চালু করা হয়, তবে যাত্রী সাধারনের জন্যে নয়, এই বিমানবন্দরটি ব্যবহার করা হচ্ছে বাংলাদেশ বিমান বহিনীর জন্য। বর্তমানে সমশেরনগর এয়ারপোর্টটি বাংলাদেশ বিমানবাহিনী তাদের ঘাটি হিসেবে ব্যবহার করছে। এখানে নিয়মিত সামরিক বাহিনীর বিমান উঠানামা করে।
সবচাইতে উন্নত করে তৈরী করা হয় হবিগঞ্জের চুনারুঘাট এয়ারপোর্ট, এই বিমান বন্দরের বাঙ্কারে একসাথে বেশ কয়েকটি ফাইটার বিমান রাখারও ব্যবস্থা করেছিল ব্রিটিশ সরকার। সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে মাটির নীচে এবং উপরে রানওয়ে তৈরী করে ব্রিটিশ সরকার। এই সামরিক বিমানবন্দরটি এখন পরিত্যক্ত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এটি বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে এই বিমান বন্দরটি একটি গভীর অরণ্যে পরিণত হয়ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পাকিস্তান সরকারও এই বিমানবন্দরের প্রতি নজর দেয়নি। দেশ স্বাধীনের পরও একই অবস্থা এবিষয়ে হবিগঞ্জের সাংবাদিকরা বেশ লেখালেখি করেছেন, সর্বশেষ চুনারুঘাট-মাধবপুর থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য পরবর্তিতে বাংলাদেশ সরকারের বেসামরিক বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীও কোন রকমের উদ্যোগ নেননি।
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন মানবতার ফেরিওয়ালা নামে পরিচিত ওয়ারক্রাইম ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। দেশে বিদেশে ব্যারিষ্টার সুমন নামেই তার পরিচিতি। তিনি সমাজের অসঙ্গতি গুলো সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরে সুখ্যাতি পেয়েছেন। এমপি না হয়েও এমন সব কাজ করেছেন যা সমগ্র জাতি জানে। নির্বাচনের পূর্বে তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন শপথ নেওয়ার পরপরই তিনি সরকারী বরাদ্দের আশা না করে কাজে নেমে গেছেন, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মরা খোয়াই নদী পরিস্কার করা। কাজটি চলমান রয়েছে, তার পরিকল্পনা হলো এখানে ঢাকা হাতির ঝিলের আদলে পর্যটন স্পট তৈরী করা। এই বিমান বন্দরটিকে সচল করতে কয়েক বছর যাবত কাজ করে যাচ্ছেন লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক কাউন্সিলার ও বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের নেতা সৈয়দ আখতারুজ্জামান মিজান। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশেই বেশী থাকেন। বজ্রকন্ঠ নামে একটি অনলাইন পত্রিকার সম্পাদনা করেন। ইতিমধ্যে সাংবাদিক মতিয়ার চৌধুরীর কথা হয় ওনার বন্ধু সৈয়দ মিজানের সাথে। তার অনুরোধেই এই লিখাটি, যেন চুনারুঘাট এয়ারপোর্টটি সচল করতে সবার দৃষ্টি আকর্ষন হয়।
ব্যারিষ্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে নিয়ে আমরা অনেক স্বপ্ন দেখি। আমাদের বিশ্বাস তার মতো কয়েকজন এমপি হলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে বেশী দিন অপেক্ষা করতে হবেনা। ব্যরিষ্টার সৈয়দ সুমনের সাথে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় না থাকলেও আমার বিশ্বাস তিনি উদ্যোগী হলে তার পক্ষে সম্ভব চুনারুঘাট বিমান বন্দরটি চালু করা। তিনি বর্তমানের এই আসনের সংসদ সদস্য তিনি নিজেই ঘোষণা দিয়েছেন চুনারুঘাট-মাধবপুরকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তুলবেন। এবং আমাদেরও বিশ্বাস শুরুতেই তিনি যেভাবে মরা গাঙ জিতা করেছেন অচিরেই চুনারুঘাটের মরা এয়ারপোর্ট জিতা করতে উদ্যোগি হবেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan